কক্সবাজার জেলা ৪ আসনে থেকে আগামী সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি প্রার্থী হতে পারছেন না তা অনেকটাই নিশ্চিত।
দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে এমপি বদি আর প্রার্থী হতে পারছেন না। এছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের অনেক বিতর্কিত সংসদ সদস্যকে মনোনয়ন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
কক্সবাজারের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে ইয়াবা পাচার, মানব পাচার ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সহযোগিতা করার অভিযোগের কারণে সরকারকে বিভিন্ন সময় বিব্রত হতে হয়েছে। এছাড়াও এমপি বদি বিভিন্ন সময় সরকারী কর্মকর্তা, শিক্ষক, আইনজীবী ও ঠিকাদারকে মারধররের ঘটনাও ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন।
দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ভাগ্যে না জোটার সম্ভাবনা বেশি। গত ২৩ ফেব্রæয়ারি সংসদীয় দলের সভায় প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদস্যদেরকে আগামী নির্বাচনের জন্য ভোটারের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ে ইতোমধ্যেই আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার কাজ শুরু করেছে। এ জন্য সরকারি ও দলীয় গোয়েন্দাদের একাধিক টিম কাজ করছে মাঠে। এসব গোয়েন্দা প্রতিবেদন সরাসরি যাবে দলের হাই কমান্ডের কাছে। ইতোমধ্যে বর্তমান এমপি ও আসনভিত্তিক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আমলনামাভিত্তিক একাধিক প্রতিবেদন জমাও পড়েছে দলের নীতিনির্ধারকদের হাতে।
সূত্র মতে, জমা পড়া গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে দেখা যায়- একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন না বর্তমান সংসদের অর্ধশত এমপি। এই তালিকায় এমপি বদির নাম উপরের সারিতেই রয়েছে।
কক্সবাজার- ৪ ( উখিয়া-টেকনাফ ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি নির্বাচন করতে না পারলে তার পরিবর্তে কে আওয়ামী লীগের টিকেট পাবেন বা কাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচিত হয়ে আসতে পারবে এই সংক্রান্ত রিপোর্টও যাচাই বাছাই করা হচ্ছে ওই প্রতিবেদনে। এমপি বদি নির্বাচন করতে না পারলেও এই আসনে নির্বাচিত হতে হলে বদির আশির্বাদ লাগবে। বর্তমানে বদির বিকল্প হিসেবে সরকারি বিভিন্ন রিপোর্টে যাদের নাম এসেছে তারা হলেন এমপি বদির প্রথম স্ত্রী শাহিন চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বদির শ্বশুড় হামিদুল হক চৌধুরী, টেকনাফ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যন শফিক মিয়া, কক্সবাজার জেলা পরিষদের নারী সদস্য আশরাফ জাহান কাজল, বদির শ্যালক উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি শাহ আলম চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরীর নাম আলোচনায় রয়েছে। এছাড়াও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীও মনোনয়ন চাইতে পারেন বলেও জানা গেছে।
বিগত সংসদ নির্বাচনেও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরীর মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত ছিলো। তবে শেষ মুহূর্তেই বদিকেই পুনরায় মনোনয়ন দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ যদি এইবার বদি বা তার পরিবারের কাউকে মনোনয়ন দেয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে শাহিন চৌধুরী, হামিদুল হক চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর মনোনয় পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
দলের সাধারণ নেতা কর্মীরা চান কর্মীবান্ধব, জনসম্পৃক্ত, এলাকায় গ্রহণযোগ্য প্রার্থী। যাকে নিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের জয় নিশ্চিত করা যাবে।
কক্সবাজারের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি পূর্বপশ্চিমকে বলেন, তার বিরুদ্ধে মাদক পাচারের অভিযোগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্যই দলের ভেতর কিছু লোক নানান ধরনের কথা ছড়াচ্ছেন।
এমপি বদি বলেন, জনগণের জন্য রাজনীতি করি। আমি জনগণের উপর আস্থা রাখি। জনগণই নির্ধারণ করবে তারা কাকে এমপি বানাবেন।
পাঠকের মতামত: